Summary
পলিজেনিক ইনহেরিট্যান্স (Polygenic Inheritance):
পলিজেনিক ইনহেরিট্যান্স এমন একটি উত্তরাধিকারের পদ্ধতি যেখানে বিভিন্ন লোকাসে অবস্থিত একাধিক নন-অ্যালিলিক জিন একটি জীবনের একটি বৈশিষ্ট্য নিয়ন্ত্রণ করে। উদাহরণ হিসেবে উল্লেখযোগ্য মানুষের উচ্চতা, গায়ের রঙ এবং চোখের রঙ।
পলিজিন এবং বৈশিষ্ট্য:
- পলিজিন হল একাধিক জিনের সমন্বয়ে গঠিত একটি গ্রুপ।
- জিনের ক্রমবর্ধিষ্ণু প্রভাবের কারণে পলিজিন দ্বারা নিয়ন্ত্রিত বৈশিষ্ট্যগুলোকে মাত্রিক চরিত্র বলা হয়।
বংশগতির উদাহরণ:
নিগ্রো এবং শ্বেতাঙ্গের মাঝে বিয়ের ফলে সন্তানদের গায়ের রঙ হয় মিউল্যাটো। উদাহরণস্বরূপ, বিয়ের ফলে উৎপন্ন F1 প্রজন্মের গায়ের রঙের বৈচিত্র্য পলিজেনিক উত্তরাধিকারের এক দৃষ্টান্ত।
বৈজ্ঞানিক প্রমাণ:
- C. B. Davenport ১৯১৩ সালে গায়ের রঙের বংশগতির জোড়া জিন নিয়ে কাজ করেছিলেন।
- NilsHon Eshle ১৯০৯ সালে গমের বীজের রঙ নিয়ে পরীক্ষা করে বিভিন্ন গাছের রঙের তারতম্য দেখেছিলেন।
সম্পূর্ণ ফলাফলে দেখা যায় ১৫টি রঙিন এবং ১টি সাদা উদ্ভিদ পাওয়া যায়, যা গভীর লাল ও ফিকে লালের মধ্যে বৈচিত্র প্রকাশ করে।
পলিজেনিক ইনহেরিট্যান্স (Polygenic Inheritance) বা বহুজিনীয় উত্তরাধিকারঃ
মেন্ডেলের মতে জীবের প্রতিটি বৈশিষ্ট্য একজোড়া ফ্যাক্টর বা জিন দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয়। কিন্তু কোন নে ক্ষেত্রে দেখা যায় যে, ভিন্ন ভিন্ন লোকাসে অবস্থানকারী (নন-অ্যালিলিক) একাধিক জিন জীবের একটিমাত্র বেশি ক করে। যেমন-মানুষের উচ্চতা, গায়ের রং, চোখের রং, গাভির দুধ, ভুট্টা বা গমের দানার রং ইত্যাদি পরিমাণগত বৈশিষ্ট্য (quantitative traits) একাধিক জিনের সমন্বিত প্রয়োগের উপর নির্ভরশীল হয়।
ভিন্ন ভিন্ন লোকাসে অবস্থিত নন-অ্যালিলিক জিনের একটি গ্রুপ সম্মিলিতভাবে কোন জীবের একটি বৈশিষ্ট্য নিয়ন্ত্রণ করলে তখন সেই জিন-গ্রুপকে পলিজিন (polygene) বলে। পলিজিনে নিয়ন্ত্রিত পরিমাণগত বৈশিষ্টের বংশগতিকে পলিজেনিক ইনহেরিট্যান্স বলা হয়। জিনতত্ত্ববিদ K Mather, ১৯৫৪ সালে পরিজিন নামকরণ করেন।পলিজিনের প্রভাব ক্রমবর্ধিষ্ণু (cumulative) বিধায় এরূপ চরিত্রকে মাত্রিক চরিত্র (quantitative character) বলা হয়।
পৃথিবীতে নিগ্রোদের মতো কুচকুচে কালো থেকে শুরু করে ককেশীয়দের মতো ধবধবে ফর্সা তথা জেতার পর্যন্ত নানা প্রকার গায়ের বর্ণবিশিষ্ট মানুষ দেখা যায়। নিগ্রো ও শেতাঙ্গের মধ্যে বিয়ে হলে এদের সন্তানদের গায়ের বর্ণমা অর্থাৎ মিউল্যাটো (mulatto) হয়। মিউল্যাটোদের মধ্যে বিয়ে হলে নানা ধরনের বর্ণবিশিষ্ট মানুষ দেখা যায়। নিম্নো ও শ্বেতাঙ্গ মানুষের মধ্যে বিয়ের ফলে সৃষ্ট মিউল্যাটোদের (মাঝারি বর্ণ) গায়ের বর্ণের উত্তরাধিকার পলিজেনিক উত্তরাধিকারের একটি প্রকৃষ্ট উদাহরণ।
একজন নিগ্রো পুরুষের সাথে একজন শ্বেতাঙ্গ মহিলার বিয়ে হলে F, ও F2 জনুর ফলাফল হবে নিম্নরূপ।
ধরি, নিগ্রোদের বর্ণ সৃষ্টিকারী দুজোড়া জিন হচ্ছে B, B, B2 B2 এবং শ্বেতাঙ্গদের এ রকম দুই জোড় জিন by by by bg । এরূপ নিগ্রো পুরুষ ও শ্বেতাঙ্গ মহিলার মধ্যে বিয়ে হলে তাদের ক্রসের ফলে সৃষ্ট F, জনুর জিনোটাইপ হয় By by By by এবং ফিনোটাইপ হয় মিউল্যাটো বা মাঝামাঝি। F জনু মিউল্যাটো বা মাঝামাঝিদের মধ্যে ক্রস করলে Fy তে নানা রকম গায়ের রংবিশিষ্ট মানুষ দেখা যায়। এসব জিনের ক্ষেত্রে কোনো প্রকটতা (dominance) নেই। একট জিনের সংখ্যা যত বেশি হবে গায়ের রং-এর গাঢ়ত্ব তত বেড়ে যাবে।
C. B. Davenport ১৯১৩ সালে প্রমাণ করেন যে, নিগ্রো ও শ্বেতাঙ্গদের গায়ের রং-এর বংশগতি জোড়া জিন দিয়ে নিয়ন্ত্রিত হয়। নিগ্রোদের দুজোড়া বর্ণ সৃষ্টিকারী জিন রয়েছে যারা মেলানিন (melanin; মেরুদন্ডী প্রাণীর হবে উপস্থিত কালো বা গাঢ় বাদামী বর্ণের রক্তাক। সঞ্চয়ে সাহায্য করে। এসব জিনগুলোতে কোনো প্রকটতা দেখা যায় না। তবে এদের সমপরিমাণ ও ক্রমবর্ধিষ্ণু প্রভাব দেখা যায়। শ্বেতকায়দের ক্ষেত্রে এ জিনগুলোর অ্যালিল মেলানিন সঞ্চারে সাহায্য করে না।
১৯০৯ সালে সুইডিস বিজ্ঞানী NilsHon Eshle গমের বীজের রং নিয়ে পরীক্ষা করার সময় লাল বীজযুক্ত গমের সাথে সাদা বীজযুক্ত গমের সংকরায়ন ঘটান। F| বংশধরে তিনি সকল গমের রং মধ্যম লাল পেলেও F2 বংশধরে ১৫টি লাল এবং ১টি সাদা শস্যযুক্ত উদ্ভিদ পান। তিনি ১৫টি লাল শস্যযুক্ত উদ্ভিদের মধ্যে লালবর্ণের গাঢ়ত্বের তারতম্য লক্ষ করেন। প্রকৃতপক্ষে এই তারতম্য বিচার করে তিনি ১ ৪ : ৬ : ৪ : ১ (গাঢ় লাল : লাল : মধ্যম লাল : ফিকে লাল : সানা) অনুপাত পেয়েছিলেন।
# বহুনির্বাচনী প্রশ্ন
Read more